কোরআন-সুন্নাহর আইন বাস্তবায়নের জন্য যা করা প্রয়োজন: সোলায়মান ফরিদ
পৃথিবীতে মুসলমানরা মার খাবে, নির্যাতিত হবে, লাঞ্চিত হবে, অন্যের দয়া ও করুনায় বেঁচে থাকবে, নিজের দেশে, নিজের জন্মস্থানেও অন্যের দালালী করে বেঁচে থাকবে, দুনিয়ার দেশে দেশে আল্লাহর আইনের পরিবর্তে মানবগড়া মতবাদ বা কাফিরের আইন প্রতিষ্ঠিত হবে, পবিত্র কোরআন কি এসবের জন্যই নাজিল হয়েছিল? অথবা কোরআনের কার্যাদেশ কি স্থগিত হয়ে গেছে? তাওরাত, ইঞ্জিল ও যবুরের মতোকোরআনও কি নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে? হাজার হাজার নবী রাসূল (দঃ)দের আগমন,সাহাবায়ে কেরামদের অপরিসীম কষ্ট সব মিথ্যা হয়ে যাবে? দেহে প্রাণ এবং অন্তরে ঈমান আছে এমন কোন মুসলমান কি ইসলামের এ পরাজয় ও মুসলমানদের এ অপমান সহ্য করতে পারে? ইসলাম তো এসেছিল আল্লাহর দ্বীনকে সব ধরনের শিরক, কুফর ও অশ্লীলতার উপর বিজয়ী করতে। মুসলমানদের জন্ম হয়েছে পৃথিবীর সমগ্র
জাতি গোষ্ঠীর উপর নেতৃত্ব দিতে। সঙ্গত কারণে খোদাদ্রোহী শক্তির উপর খোদাভীতি
প্রতিষ্ঠিত থাকার কথা। কিন্তু’ আজ দুনিয়ার দেশে দেশে চতুর্দিকে খোদাদ্রোহী শক্তির
সীমাহীন জয়জয়কার অবস্থা। মুসলমানদের মেরুদন্ড সোজা করার, মাথা উঁচু করে
দাঁড়াবার শক্তি নেই। ইসলামের কোন্ সে পথ, যে পথে আজকের সীমাহীন পরাজয়ের যুগেও পুনরায় বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারে! কোন্ সে পদ্ধতি যা অন্য সকল পদ্ধতির চেয়েও অধিকতর কার্যকর। মূলতঃ সে পথটি হলো কোরআন ও সুন্নাহর পূর্ণ-অনুসরণ।
অথচ এখান থেকেই মুসলমানদের সামগ্রিকভাবে বিচ্যুতি ঘটেছে। মুসলমানদের অতীত গৌরব গাঁথা, বিজয়ের ইতিহাস মুসলমানরাই বিস্মৃত হতে চলেছে। অতীতে ইসলামের বিজয়ের পেছনে তেল, গ্যাস, অর্থ ও জনসম্পদের তেমন কোন ভূমিকা ছিলনা। মানব
জাতির প্রতি আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ দান হচ্ছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর সুন্নাহ ও
ও আল কোরআন। এ দু’টোই ইসলামের মূল শক্তি, বিজয়ের মূল উৎস। ইসলাম যে
অন্যান্য মত, পথ ও ধর্ম থেকে অনন্য ও শ্রেষ্ঠ তার মূল উপলক্ষ এগুলোই। মূলতঃ
কোরন-সুন্নাহর অনূকরণ, অনুসরণ ও বিশ্বব্যাপী প্রিয় নবী হযরত (দঃ) এর আদর্শ
বাস-বায়নের মাধ্যমে আজো ইসলামের সেই কাঙ্খিত বিজয় অর্জিত হতে পারে। এ
লক্ষ্য অর্জনের সকল উদ্যোগ আয়োজনের পেছনেই মহান আল্লাহর সাহায্যের দরজা
অবারিত থাকে। মানুষ মানুষের উপর জোর-জবরদস্তী, অত্যাচার, নিপীড়ন ও
নির্যাতনের পথ বন্ধ করে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন প্রতিষ্ঠা করে মানুষের অন্তরে
মানবিক বোধ জাগ্রত করাই ইসলামের মৌলিক আবেদন। ক্রোধ, লোভ, লালসা ও
পাপাচার মুক্ত বিশ্বই একজন মোমিনের কাম্য। সবধরনের অধর্ম, অপকর্ম ও
অত্যাচারের অচলায়তন ভেঙ্গে একটি আলোকিত শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠায় ইসলাম
অনুপ্রেরণা যোগায়। আল্লাহর মনোনীত ধর্ম ইসলামকে আল্লাহ ফেরেস্তা দিয়ে নয়,
মানুষের মাধ্যমেই বিজয়ী করতে চায়। যেভাবে ইসলামের প্রাথমিক যুগে হযরত (দঃ) এর নির্দেশে নগন্য সংখ্যক সাহাবায়ে কেরাম কাফিরদের বিশাল বাহিনীকে পরাজিত করে ইসলামকে বিজয়ী করেছিল। আল্লাহর নির্ধারিত লক্ষ্যার্জন ছাড়া মুসলমানদেরকে অন্য কোন লক্ষ্যের জন্য সৃষ্টি করেনি। তাই মুসলমানদেরকে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে
সমাজে কোরআন-সুন্নাহর আইন কার্যকর করার জন্য সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশ্বাসীদের জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্বেও
যারা মানুষকে সৎ কাজের আহবান জানাবে না, অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখার সংগ্রাম করবে না তাদের আল-হ-রাসূলের প্রতি বিশ্বাসও প্রশ্ন বিদ্ধ হয়ে যাবে। আল্লাহ আরো
বলেছেন- ‘তুমি (মানুষকে) ডাকো তোমার রবের দিকে বুদ্ধি-মত্তা এবং সুন্দর বক্তব্যের মাধ্যমে’ (সুরা নহল-১২৫)। কোরআনের প্রতিটি বাক্যই মোমেনদের জীবনে কার্যকর
করা এবং সমাজে বাস্তবায়ন করা ফরজ। তাই সমাজে ইসলামের বিধি-বিধান
বাস্তবায়ন করা মুষ্টিমেয় লোকের কাজ নয়; এটা আল-হ-রাসুলে বিশ্বাসী সকল
মুসলমানদের জন্যই ফরজ। ইসলাম গ্রহণ করার অর্থ শুধুমাত্র ‘কালেমা’ পড়া নয়।
ইসলাম গ্রহন করার অর্থই হলো দ্বীনকে পরিপূর্ণভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব গ্রহন
করা, কোরআন-সুন্নাহর আইন কার্যকর করার জন্য আল্লাহর সাথে শপথ করা,
আল্লাহর জমিনে মানুষের জন্য আল্লাহ নির্ধারিত আইনের স্থলে প্রতিষ্ঠিত বিরাজমানাা
খোদাদ্রোহী মতবাদ ও মানবতা বিরোধী সকল ব্যবস’ার মুলোৎপাঠনের দায়িত্ব গ্রহন
করা। এ দায়িত্বের কোন শেষ নেই; বরং আমৃত্যু একজন মো’মেনকে এ শপথের উপর
প্রতিষ্ঠিত থাকতে হবে। নামাজ ফরজ হয়েছে নবুয়ত প্রকাশের ১২ বৎসর পর। রোজা
ও যাকাত ১৫ বৎসর পর এবং সবশেষে হজ্ব। কিন’ নবুয়ত প্রকাশের পর থেকেই
হযরত (দঃ) দাওয়াতী কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি রাসূল হিসেবে মানুষের কাছে
আল্লাহর আদেশ পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব পালন করেছেন নিরলসভাবে। একই
ধারাবাহিতায় এ দায়িত্ব পালন করেছেন সাহাবায়ে কেরামগন। ইসলামের এ
দাওয়াতের কাজ আল-হর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আল-হ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘যে
ব্যক্তি মানুষকে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকাজ করে এবং বলে, আমি আজ্ঞাবহ,
তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার? (সূরা হা-মীম-৩৩)। জীবনের সর্বাবস’ায়
মুসলমানদেরকে কোরআন-সুন্নাহর আইন কার্যকর করার দায়িত্ব পালন করতে হবে।
সমাজে কোরআন-সুন্নাহর আইন প্রতিষ্ঠাকারী দলের অনুপস্থিতি মানেই খোদায়ী
সাম্রাজ্যে খোদাদ্রোহী শক্তির অপ-তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়া। যারা মানুষকে ন্যায়ের পথে
আহ্বান করবে, অন্যায় ও অকল্যাণের পথ থেকে বাচিয়ে রাখবে, মানুষের জন্য
আল-হর নির্ধারিত সীমা লংঘন থেকে বিরত রাখবে; তাদের অনুপসি’তি মানেই সব
ধরনের পাপাচারের নোংড়া খেলায় মেতে থাকার শয়তানী উৎসব, আয়োজন বৃদ্ধি
পাওয়া,শয়তানের প্রতিনিধি অপ-কর্মকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া। তখন সমাজে
একদিকে যেমন অন্যায়-অনাচার বৃদ্ধি পায়, অন্যদিকে সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতৃত্ব চলে
যায় দুর্বৃত্তদের হাতে। ফলে বিপর্যস- হয় রাষ্ট্রীয় ব্যবস’া, অবক্ষয় ঘটে জাতীয় চরিত্রের,
ধ্বংস হয়ে যায় সমাজের পারস্পরিক মানবিক বন্ধন। মূলতঃ এসবই হলো আল্লাহর
অবাধ্য বিপদগ্রস্ত’ মানুষের প্রতি আল্লাহর শাস্তির নমুনা। এ ব্যাপারে প্রিয় নবী (দঃ)
উম্মতের প্রতি হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছেন, এমন একটি সময় আসবে যখন
পাপাচারের প্রসার দেখেও মানুষ প্রতিরোধে আগ্রহী হবে না। আর তারাই পৃথিবীতে
আল্লাহর শাস্তি ডেকে আনবে। ফসলী জমিতে ফসলের চাষ না হলে যেমন আগাছা
জন্মায় তেমনি সমাজে সত্যের প্রচারনা ও ন্যায়ের চর্চা না থাকলে অসত্য ও অন্যায়
অপকর্ম মাথা তুলে দাড়াবেই। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এমন একটি দল থাকতে
হবে যারা মানুষকে সত্যের পথে ডাকবে এবং অন্যায়, অসত্য ও পাপাচারের বিরুদ্ধে
রুখে দাড়াবে। এ পথে প্রয়োজনে তাদের জান-মাল, ধন-দৌলত, সন্তান-সন্ততি
সবকিছু বিলিয়ে দেবে। যেভাবে আল্লাহর প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (দঃ) ও সাহাবায়ো
কোরামগণ ইসলামের জন্য জীবনের সবকিছু উৎসর্গ করেছিলেন। হযরত আবু বক্কর
ছিদ্দিক (রঃ), হযরত ওমর (রাঃ), হযরত আলী (রাঃ) ও হযরত ওসমান (রাঃ) যেমন
নিজেদের জান-মালসহ সবকিছু উৎসর্গ করেছিলেন তেমনি ইমাম হাসান (রাঃ), ইমাম
হোসাইন (রাঃ), হযরত আমির হামজা (রাঃ), হযরত জাফর ছাদেক (রাঃ), গাজী
সালাউদ্দীন (রাঃ) সহ অসংখ্য সাহাবায়ে কেরাম ও মর্দ্দে মোজাহিদগণ ঈমান,
ইসলামের জন্য জীবন দিয়ে ইসলামের বাগানকে উর্বর করেছিলেন। নবীজীর (দঃ)
জামানায় এমন কোন মুসলমানকে খুজেঁ পাওয়া যাবে না যিনি ইসলাম গ্রহণ করেও
সমাজে কোরআন সুন্নাহর আইন কার্যকর করার দায়িত্ব পালন করেননি। প্রতিটি জড় ও
জীবিতেরই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকে। সে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের জন্যই আমরা মাটিকে
মাটি,পানিকে পানি ,আগুনকে আগুন, বরফকে বরফ, ফুলকে ফুল ও ফলকে ফল বলে
থাকি। তেমনি বিশিষ্ট্য আদর্শের জন্যই মুসলমানকে মুসলমান বলা হয়ে থাকে।
মুসলমানের মুসলমানিত্বই হলো আল্লাহর-রাসূলের পথে ,কোরআন ও সুন্নাহর পথ
মানুষকে আমৃত্যু ডাকা। ইসলামকে বিজয়ী করার আমৃত্যু জীবন- বাসনায় একজন
মুসলমানকে শাহাদাতে উদ্বুদ্ধ করে। মুসলমানদের ঈমান এমন একটি দূঢ় অঙ্গীকারের
নাম যা যুগে যুগে মুসলামানদেরকে শাহাদাতের মালা পড়িয়েছে। ‘ঈমান’ অদৃশ্য যা
স্পর্শ করা যায় না। কিন্তু একজন মো’মেনের ইসলামী জজবা ও কোরআন সুন্নাহর
আইন কার্যকর করার প্রচেষ্টা দেখে ঈমানের উত্তাপ টের পাওয়া যায়। আগুনের কাজ
হচ্ছে দহন করা কিন্তু যে আগুনে দাহন ক্ষমতা থাকেনা তাকে আগুন বলা যাবে না।
যে মুসলমানের অন্তরে ইসলামের চেতনা নেই, ঈমানের উত্তাপ নেই তাকে মো’মেন
বলা যায় না। ফুলের সৌন্দর্য মানুষকে মোহিত করে, সুবাস অন্তরকে সজীব করে,
মধু আহরণ করে মৌমাছি জীবন ধারণ করে। কিন্তু কাগজের ফুলের সৌন্দর্য মানুষকে
সাময়িক বিভ্রান- করে ঠিক তাতে সুবাস এবং মধু কোনটিই পাওয়া যায় না।
তেমনিভাবে যে মুসলমানের অন্তরে ঈমানের উত্তাপ নেই তাকে শুধু সংখ্যায় গণনা করে
সাময়িক তৃপ্তি পাওয়া যায় বটে; কিন্তু তাকে নিয়ে জেহাদের ময়দানে যুদ্ধ করে
ইসলামকে বিজয়ের স্বপ্ন দেখা যায় না। ঈমানী জজবার জন্যই ইসলামের প্রথম যুগে
সংখ্যায় নগন্য হয়েও মুসলামানরা বাব বার বিজয় অর্জন করেছেন। অথচ আজ
মুষলমানরা সংখ্যায় অধিক হয়েও সর্বত্র পদানত ও পরাজিত হচ্ছে। আজ মুসলমানদের
সংখ্যায় আধিক্য থাকলেও ঈমানের উত্তেজনা নেই। ইসলামের সকল ইবাদতের লক্ষ্যই
হলো পরহেজগারী অর্জন করা। সেই তাকওয়া বা পরহেজগারী থেকেই জন্ম নেয়
ইসলামকে বিজয়ী করার দৃঢ় অঙ্গীকার। পরিবার,সমাজ,রাষ্ট্র, ও আন্তর্জাতিক প্রতিটি
ক্ষেত্রে ইসলাম শয়তানী অপ-শক্তির কাছে মার খাবে, পরাজিত হবে,পদানত হবে আর
নামাজী-রোজাদার মুসলমানরা শয্যাশায়ী-রোগীর মত নিরব,নিথর হয়ে ঘরে বসে
থাকবে তা কি কল্পনা করা যায়? একজন ঈমানদার মুসলমানের কাছে এটাইকি
মিল্লাতের প্রত্যাশা? ইসলাম বিরোধী,খোদাদ্রোহী সকল অপ-শক্তির বিরুদ্ধে উত্তপ্ত
যুদ্ধের ময়দানে “জিহাদের উন্মাদনায়” ঈমানদারের বড় পরিচয়। প্রিয় নবী হযরত
মুহাম্মদ (দঃ) ইসলাম ও মুসলমানদেরকে সর্ব প্রকার জুলুম ও নির্যাতনের হাত থেকে
বাঁচানোর জন্য,জালেমের জুলুম থেকে মজলুমকে রক্ষার জন্য,মানুষরূপী পশুদের কবল
থেকে মানবতাকে উদ্ধারের জন্য,সর্বোপরি পশুত্বের উপর মানবিকতাকে বিজয়ী করার
জন্য প্রায় ২৭ টি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। যুদ্ধের ময়দানে প্রিয় নবী (দঃ) পবিত্র রক্ত ও
দন্দান (দাঁত) মোবারক পর্যন- বিসর্জন দিয়েছিলেন। সেই নবীর (দঃ) উম্মত পরিচয়
দিয়ে মানবতার এই দুর্দিনে,ইসলামের বিপর্যস্ত অবস্তায় কোন ঈমানদার কি ঘরে বসে
থাকতে পারে? মসজিদ,মাদ্রাসা,খানকার অজুহাতে কোন ঈমানদার কি জেহাদের
ময়দান থেকে পালিয়ে বাঁচতে পারে? ইসলামের দুর্গ অরক্ষিত রেখে,জেহাদের ময়দান
বিপর্যস্ত রেখে মুসলমানের কোন এবাদত পূর্ণ হতে পারে না। অন্ধকারে কারো নিরব
উপস্থিতি সহজে টের পাওয়া যায় না। অথচ একটি জ্বলন্ত বাল্বের নীচে কারো সামান্য
নড়াচড়াও মানুষের দৃষ্টিকে ফাঁকি দিতে পারে না। যে সমাজে ঈমানদার মুসলমানের
অবস্থান নেই সে সমাজ আলোহীন এতই অন্ধকার যে, সেখানে ভাল-মন্দ,ন্যায়-অন্যায়
পার্থক্য করারও কোন মান মানদন্ড থাকেনা, ভালকে মন্দ থেকে পৃথক করারও কোন
সুযোগ থাকে না। কিন্তু’ যে সামাজে একজন ঈমানদার মুসলমান থাকে তার ঈমানের
আলোয় সত্য-মিথ্যা,ভাল-মন্দ ও ন্যায়-অন্যায় সবকিছু স্পষ্ট দেখা যায়। পাশাপাশি
বসবাস করেও প্রতিবেশী হিসেবে একজন অমুসলিম যদি একজন মুসলমানের ঈমানের
আলোর সন্ধান না পায়,আলোকিত হওয়ার সুযোগ না পায় তাহলে তার সাথে প্রাণহীন
পাথর ও উদ্ভিদের সাথে বসবাসের পার্থক্য কোথায়? কোন মুসলিম স্বার্থপর বা
আত্মকেন্দ্রিক হতে পারে না। ছিরাতুল মোস্তাকিমের উপর অবিচল থাকার যে নির্দেশ
আল্লাহ দিয়েছেন, নিজেকে এবং পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশিকে জাহান্নামের প্রজ্জলিত
শিখা থেকে বাচাঁনোর যে কথা কোরআনে বলা হয়েছে তারই সূত্র ধরে একজন
মুসলমানকে (যিনি ঈমানের আলোর সন্ধান পেয়েছেন) তার আলোয় সমাজকে
আলোকিত করার, সমাজকে পথ দেখাবার দায়িত্ব পালন করতে হবে। কিন্তু যে প্রদীপে
আলো থাকে না সে প্রদীপ দিয়ে অন্যকে পথ দেখানোতো দূরে সমাজকে নিজের
চেহারা দেখানোও সম্ভব হয় না। শুধু কালেমার উচ্চারণে একজন মুসলমানের ঈমানের
পরিচয় পাওয়া যায় না। অথচ আজকের সমাজে শুধুমাত্র কালেমা পড়া মুসলমানের
সংখ্যাধিক্য রয়েছে ঠিকই কালেমার অঙ্গীকার পালনের আধিক্য নেই। হযরত (দ:) এর
নবুয়ত প্রকাশের ১২ বৎসরে বহু সাহাবায়ে কেরাম ইসলামের জন্য শহীদ হয়েছেন
নামাজ, রোজা, হজ্ব ও জাকাতের মতো ফরজ ইবাদতের সুযোগই তাঁরা পাননি।
তাঁরাই ইসলামের প্রথম যুগের শ্রেষ্ঠ সন্তান। আল্লাহ রাসূলের প্রতি বিশ্বাসের প্রমাণ শুধু
তাঁরা মুখে দেননি জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে সেই বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন।
শাহাদতের মতো শ্রেষ্ঠ আমলের মাধ্যমে আল্লাহর দাসত্বের প্রমাণ দিয়েছেন।
মুসলমানদের বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র রূজি-রোজগারে সীমাবদ্ধ নয়। খেলাফতের
দায়িত্বের কারণেই “মানুষ” সৃষ্টির আলাদা বৈশিষ্ট নিয়ে শ্রেষ্টত্ব অর্জন করেছে।
খেলাফতের সে দায়িত্ব শুধু তসবিহ পাঠে সীমিত নয়। আল্লাহর তসবিহ পাঠতো
ফেরেশতা থেকে চন্দ্র-সূর্য,পশু-পাখী,সাগর-নদী ও বৃক্ষরাজিসহ সমগ্র সৃষ্টি জগতই করে
থাকে। কিন্তু তাদের আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে খেলাফতের কার্য সম্পাদন হয় না।
যৎকারণে খেলাফতের দায়িত্ব পালনের জন্য আল্লাহ আলাদা বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন মানুষ সৃষ্টি
করেছেন। খেলাফতের মূল কথাই হলো আল্লাহর জমিনে আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করা।
নিছক ‘আবেদ’ হওয়া মুসলমানের একমাত্র লক্ষ্য হতে পারেনা বরং খলিফা হিসেবেই
মুসলমানদের দায়িত্বের পরিধি অনেক ব্যাপক ও বিস-ৃত। আল্লাহর জমিনে স্রষ্টার
চাহিদানুযায়ী কোরআন-সুন্নাহর আইন বাস-বায়ন করাই হচ্ছে খলিফাদের দায়িত্ব।
ইবাদত খিলাফতের দায়িত্ব পালনে দৃঢ়তা বাড়াবে এটাই কাঙ্খিত। কিন্তু যেই ইবাদত
খেলাফতের দায়িত্ব পালনে বিমুখ করে তাও কি ইবাদত? আল্লাহ ইসলামের পরিপূর্ণ
অনুসরনের নির্দেশ দিয়েছেন। অতএব কোরআন-সুন্নাহর পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ ও
বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সমাজে কাঙ্খিত শান্তি আসতে পারে।
পরিপূর্ণ কোরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে গেলেই ইসলাম বিরোধী
শক্তি,খোদাদ্রোহী শক্তি ও ইসলাম বিকৃতকারী শক্তির মোকাবেলা করতে হবে। সেজন্য
আল্লাহ বলেছেন “ তোমরা ইসলামের রজ্জুকে ঐক্যবদ্ধভাবে আঁকড়ে ধর। পরস্পরা
বিচ্ছিন্ন হয়োনা”। ঐক্যবদ্ধ থাকলে পৃথিবীর কোন শক্তির পক্ষেই মুসলমানদের
পরাজিত করা সম্ভব নয়। অতীত ইতিহাসতো তাই বলে । বিচ্ছিন্ন এবং বিক্ষিপ্ত কোন
কর্মকান্ডের মাধ্যমে যেমন কোন দুর্বল শত্রুকেও মোকাবেলা করা যাবে না; তেমনি
নিজেদের অসি’ত্ব টিকিয়ে রাখাও সম্ভব হবেনা। আল্লাহর জমিনে কোরআন-সুন্নাহর
আইন কার্যকর করার জন্য মজবুত সাংগঠনিক ভিত্তির প্রয়োজন রয়েছে। যে সংগঠনের
লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও আদর্শ চুড়ান্তভাবে কোরআন-সুন্নাহর আক্বায়েদের উপর প্রতিষ্ঠিত
থাকবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের এবং
তোমাদের পরিবার-পরিজনকে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করো’(সুরা-তাহরীম-৬)।
এ আয়াতে নিজেকে এবং পরিবার পরিজনকে রক্ষার আল্লাহ যে নির্দেশ সে সম্পর্ক
হযরত ওমর (রা:) প্রিয় নবীর (দ:) নিকট জানতে চেয়ে আরজ করলেন; ইয়া
রাসূলাল্লাহ (দ:)! নিজেকে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করার বিষয়টি বুঝলাম ; কিন্তু
পরিবার পরিজনকে কিভাবে দোযখের আগুন থেকে বাঁচাবো? এ কথা শুনে প্রিয় নবী
(দ:) বললেন ‘ আল্লাহতা’লা যে সমস্ত কাজ করতে নিষেধ করেছেন তা থেকে মানুষকে
বিরত রাখবে এবং যে সমস্ত কাজ করতে আদেশ করেছেন সে সমস্ত কাজ করতে
আদেশ করবে’। দোযখের আগুন থেকে বাঁচতে হলে প্রথমে নিজেকে মো’মেনে কামেল
এবং মর্দ্দে মোজাহিদ হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। কোরআনের নির্দেশ মতো পরিবার-
পরিজনকেও দোজখের আগুন থেকে বাঁচাতে হলে সমাজে বিরাজমান সবধরনের
পাপাচারের উৎস বন্ধ করার পদক্ষেপ নিতে হবে। এগুলো শুধু বক্তৃতা, বিবৃতি বা
ওয়াজ দ্বারা বন্ধ হবে না। এগুলো বন্ধ করতে হলে সমাজে নানামুখী সামাজিক কার্যক্রম
হাতে নিয়ে কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ আন্দোলনের মাধ্যমে সমাজ
থেকে যেমন সবধরনের অপ-কর্ম দূরীভুত হবে, অন্যদিকে সমাজে মানবিক সহাবস’ান
ও শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে। যাতে করে সমাজের মানুষের ইহকালীন ও
পরকালীন মুক্তির দরজা খোলে যাবে। এ আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দেবে তাদেরও
ঈমান আক্বিদা যেমন সুদৃঢ় ভিত্তি পাবে, তেমনি পরহেজগারীর উচ্চাসনে অধিষ্ঠানের
সুযোগ তৈরী হবে। মনে রাখতে হবে যারা কোরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক শাসন ব্যবস্তা
প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবে তাদের মধ্যে ঈর্ষনীয় ও জনগণের অনুকরণীয়
আদর্শ বিদ্যমান থাকতে হবে। তাদেরকে কথা ও কাজে, আচরনে নিজকে সমাজে
সুন্দরভাবে উপস’াপন করতে হবে। কোরআন-সুন্নাহর আইন বাস্তবায়নে সামাজিক
দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জনগণের আত্ম-সমালোচনার মুখে যে আত্মশুদ্ধির ছবক
মিলে তা গণবিচ্ছিন্ন হয়ে ঘরের কোনে বসে থাকলে পাওয়া যাবে না। মানুষের কল্যাণ
কামনায় রাস্তায় বের হওয়ার চেয়ে বড় কোন জিকির নেই। প্রশ্ন থাকতে পারে
আন্দোলনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য কি হবে? কাদের নিয়ে এ আন্দোলন পরিচালিত হবে? এ
আন্দোলনের চুড়ান্ত পরিণতিই বা কি হবে? সামগ্রিকভাবে ইসলামের কার্যক্রম
ভৌগলিক বা বর্ণের বিভিন্নতায় বাধাগ্রস্ত হয় না। মূলতঃ ইসলাম জাতি-ধর্ম-বর্ণ-স্থান-
কাল-পাত্র নির্বিশেষে গোটা পৃথিবীর মানুষের মুক্তির সনদ। সুতরাং পৃথিবীতে
কোরআন-সুন্নাহর আইন কার্যকর করাই হবে এ আন্দোলনের উদ্দেশ্য এবং এ
লক্ষ্যার্জনেই সকল কর্মসূচী বাসস্তবায়িত হবে। কোরআন-সুন্নাহর আইন বাস্তবায়নে যারা
প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে তাদেরকে নিয়েই এ আন্দোলন পরিচালিত হবে। মনে রাখতে হবে
নেতৃত্ব যত চৌকসই হোক না কেন, যে আন্দোলন আল্লাহ-রাসূলের সন্তুষ্টি অর্জনের
নিমিত্তে পরিচালিত হয় সেখানে আল্লাহ-রাসূলের সন’ষ্টিই বড় কথা।
হেদায়তের মালিক যেহেতু আল্লাহ, সকল কাজের সফলতার জন্য অবশ্যই আল্লাহর
সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে। আন্দোলনের ময়দানে কাঙ্খিত সফলতা না আসলেও
তাতে কর্মীদের হতাশ হবার কোন কারণ নেই। নেতা বা কর্মীর নিয়ত, প্রচেষ্টা ও
কোরবাণীর উপরেই আল্লাহ-রাসূলের সন’ষ্টি নির্ভর করে। আন্দোলনে কতটুকু সফলতা
আসলো কয়জন নতুন কর্মী সৃষ্টি হলো না হলো এদিকে দৃষ্টি দিয়ে হতাশ হওয়া
ইসলামী আন্দোলনের নেতা বা কর্মীর বৈশিষ্ট্য নয়। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের সব
সময় ভাবতে হবে আমি কতটুকু আন্তরিকতা নিয়ে কতটা আল্লাহ -রাসূলের প্রেম নিয়ে
মাঠে ময়দানে কাজ করছি। কাজে অলসতা ও নিয়তের হেরফের থাকলেই তার জন্য
আল-হর কাছে অপরাধী হতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের পথ অত্যন্ত বন্ধুর ও বিপদ সংকুল। কোরআন-সুন্নাহর শাসন
কয়েম করতে গিয়ে পদে পদে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জেল-জুলুম, হুলিয়া,
নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়। শত বিপদ ও প্রতিকুলতার মধ্যেও কর্মীদেরকে
বিশাল মনোবল ও ইস্পাত কঠিন ঐক্যের মাধ্যমে দৃঢ় কদমে এগিয়ে যেতে হবে। মনে
রাখতে হবে শিক্ষা প্রদানে যেমন শিক্ষা বাড়ে তেমনি ইসলামী আন্দোলনে বাস্তবায়নকালে
তাকওয়া বা পরহেজগারী বাড়ে। আন্দোলনের নেতা-কর্মীদেরকে অত্যন- ধৈর্যশীল,
সহনশীল ও জনগনের প্রতি সহানুভুতিশীল হতে হবে। সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা
করতে হবে গায়ের জোরে নয়,উচ্চরত বুদ্ধি-বৃত্তির মাধ্যমে। কোন নবী রাসূলের (দঃ)
যুগেই আল্লাহর ইবাদতের অনুকুল পরিবেশ ছিল না। আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও আল্লাহর
আদেশ মেনে চলার কথা বলায় হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা
হয়েছে, দেশ ছাড়তে হয়েছে হযরত মুছা (আঃ) কে, হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর
বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে; এমনকি তিঁনি কাফিরদের অত্যাচারে দেশ পর্যন্ত ত্যাগ
করেছিলেন। সম-সাময়িক কালে কোন নবী রাসূলেরই (দঃ) বাক-স্বাধীনতা ছিলনা।
কিন’ বর্তমানে ইসলামী আন্দোলনের অনুকুল পরিবেশ থাকলেও কোরআন-সুন্নাহর
আইন কার্যকর করার পেছনে এক শ্রেণীর মুসলমানরাই বড় বাধা হয়ে রয়েছে। কিছু
সংখ্যক মুসলমানের নোংরা, কদর্য ও বিভৎস আচরণে যেমন ইসলাম ক্ষতিগ্রস- হচ্ছে।
আবার কিছু সংখ্যক মুসলমানের সুবিধাবাদিতা ও দালালীর কারনেও ইসলাম পিছিয়ে
রয়েছে। স্রোতহীন নদীতে যেমন জঞ্জাল এসে ভর করে, তেমনি মুসলমানের অঙ্গীকারহীন
জীবনে ভর করেছে পাপাচার। ফলে যে সমস্ত মতবাদকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করার
কথাছিল সে সমস্ত মতবাদকেই মুসলমানরা সাদরে গ্রহণ করছে, আলিঙ্গন করছে।
যুদ্ধরত সৈনিকের জীবনে দেশ প্রেম না থাকলে যেমন জয়ী হওয়া যায়না, তেমনি
মুসলমানদের মধ্যে ইসলামকে বিজয়ী করার অঙ্গীকার না থাকলে ইসলামকে
রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। ইসলাম গ্রহণকারী ব্যক্তির সামাজিক দায়িত্বও
বেশী। বিশেষতঃ কোরআন-সুন্নাহর আইন বাস্তবায়নের কর্মীদের সমাজিক দায়িত্ব
আরো ব্যাপক ও বিস্তৃত। সমাজে বসবাসকারী জনগণের সুখ-দুঃখ, রোগ-শোক,
বিপদ-আপদে সর্বাগ্রে এগিয়ে আসতে হবে ইসলামী আন্দেলনের কর্মীদেরকেই। কারণ
মানুষের জন্য মানবতার সেবার চেয়ে শ্রেষ্ঠ কোন কর্ম নেই।
সমাজের প্রত্যেকটি কর্ম-কাণ্ডের সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্টভাবে জড়িত থাকবে হবে। বিয়ে-
শাদী, সামাজিক, পারিবারিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করতে হবে
ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে। সমাজে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখা, অপসংস্কৃতি ও
বেহায়াপনা থেকে সমাজকে রক্ষ করা, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গরীব, অনাথ,
অসহায় শিশু, বিধবা মহিলা ও কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার প্রতি সাহায্যের হস্ত সমপ্রসারিত
করা, সমাজের চতুর্দিকে তথা প্রত্যেকের চারপাশ পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখা, খাল-বিল,
রাস্তা-ঘাট, উঠোন-উদ্যান যেখানেই খালি জায়গা পাওয়া যাবে সেখানে বৃক্ষ রোপনের
ব্যবস্তা করা, খাল-বিল, নালা-নর্দমা পরিস্কার রাখা, বয়স্ক প্রবীনদের সহযোগীতা
করা, যে সমস্ত ছেলে-মেয়েরা স্কুল-মাদ্রাসায় লেখা-পড়া করেনা তাদেরকে শিক্ষায়
উদ্বুদ্ধ করা। রাস্তা-ঘাটে বখাটেদের উৎপাত বন্ধকরা, সমাজের প্রতিটি এলাকায় সম্ভাব্য
জনহিতকর কার্যক্রমের মাধ্যমে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে সেবার মানসিকতা
নিয়ে মানুষের পাশে দাড়াতে হবে। এ সমস- কর্মকান্ডের মাধ্যমে একদিকে যেমন
মানুষের কাছে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের মূল্যায়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে
কোরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জনসমর্থন সংগঠিত হবে।
লেখকঃ সোলায়মান ফরিদ
যুগ্ন-মহাসচিব, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ
www.islamicfrontbd.com